কাট-মানি ও তারপর | মমতার সরকারের কি পতন আসন্ন ? তাই কি প্রশান্ত কিশোরকে দিয়ে আসন্ন ভোটের বৈতরণী পার চাইছেন ? লিখলেন সন্ময় মুখোপাধ্যায়



কাট-মানি ও তারপর |  মমতার সরকারের কি পতন আসন্ন ? তাই কি প্রশান্ত কিশোরকে দিয়ে আসন্ন ভোটের বৈতরণী পার চাইছেন ? লিখলেন - সন্ময় মুখোপাধ্যায়


সারা বাংলা জুড়ে দৌড় । পারসেন্টেজ-বাজদের দৌড় । দেখার মত দৌড় ।  

খড়ের গাদায় আগুনটি লাগিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং  । এখন ৯৯.৯ শতাংশ ভালো বললে হবে ? 

মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, দিনাজপুর, হুগলী জ্বলছে । জ্বলছে অনুব্রতর  বীরভূম ।       
 টাকা ফেরানোর লড়াই । লড়ছেন গরীব মানুষ । সুদ চাইনা, আসলটা ফেরত দাও । তার লড়াই ।

অনেকে বলছেন – প্রশান্ত কিশোর শিখিয়ে দিয়েছেন, তাই বলেছেন । ভুল, সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এটা মানুষের কাছে আমি কত ভাল সাজা মমতার free hand exercise । মমতার এটা পুরানো অভ্যাস । মাঝে মাঝে ‘ভাল সাজা’ । ‘দেখ আমি বাড়ছি মামি’ styleএর মত একটা আলগা আদিখ্যেতা আছে এই ব্যায়মে ।  আমার লোকেরা খারাপ হতে পারে, আমি নয় । এ খেলাটা উনি অনেকবার খেলেছেন । এবারও খেলতে গিয়ে হিট উইকেট হলেন । আম্পায়ার (জনগণ) আঙুল তুলে দিয়েছেন । উনি ক্রিজ ছাড়তে নারাজ । ভাবখানা - আমিতো আউট হইনি ।

 ২০২১-এ pavilionএ যাওয়ার normal সময় । সেটা ভেবেই উনি আকুল । এত ভুল বকা । এত কান্নাকাটি ।          

এই অবস্থাতে আবার  cut moneyর গান বাঁধলেন নচিকেতা – “যারা খেয়েছেন কাট মানি, দাদারা অথবা দিদিমণি / এসেছে সময় গুটিকয় দাঁত/ কেলাতে কেলাতে ফেরত দিন / আসছে দিন” । 



এই গান শুনে যারা অহেতুক গ্যাঁটের কড়ি খরচা করেছে তাঁরা ঠিক থাকতে পারেন ? আপনি পারবেন ? কেউ পারবে ? পারা সম্ভব ?            

সময় খারাপ গেলে বোধহয় এটাই হয় । নচিও শেষে লাথি মারল ।  এ রকম নয়, গ্রামে গঞ্জে  original লাথি খাচ্ছেন তাঁর গোবেচারি ছেলে পুলেরা । cut money ফেরত দেওয়ার আন্দোলনে । ফিরহাদ হাকিম damage controlএ নেমেছেন । বলছেন সবাই নয় ৯৯ শতাংশ ভাল, ১ শতাংশ খারাপ । তাতেও ‘কেলানি’ বন্ধ হচ্ছেনা দেখে পার্থ বলছেন – ৯৯.৯ শতাংশ ভাল । cut money নেয় সেই  পয়েন্ট ১ শতাংশ খারাপ ।     

অনুব্রত মণ্ডল কি সাফাই দিলেন শুনুন 


আর পাবলিক শোনে ? মার দেদার মার । তৃণমূলের করিৎকর্মা কৃতীদের । মার বাঁচাতে এখন শ্বশুর বাড়িও safe মনে করছেন না আদরের জনপ্রতিনিধিরা । কেননা সেখানেও তো হালত খারাপ সেখানকার নেতার । তাহলে যাবেন কোথায় এঁরা ? কৃতীরা ? অনেক ঠেকে তাই ঠিক হয়েছে ২১ জুলাই মঞ্চে বাংলার সব জনপ্রতিনিধিকে character certificate দেবেন মমতা । ১০০ শতাংশ সৎ বলে ।  
    

মিটবে তাতে সমস্যা ? মানুষ তো জানতে চাইছে – নির্বাচনের সময় দেড় মাস helicopter বিহার করেছেন আপনি । ৭০ হাজার টাকা ঘণ্টা । হেলিপ্যাড, সিকিওরিটি খরচ আলাদা । প্রতিদিন আপনার জন্য খরচ হয়েছে আনুমানিক ১৫ লাখ । ভাইপোর helicopter বিহার অন্তত সাত লাখ, প্রতিদিন ।  এটা তো সরকার খরচ করেনি । করেছে দল । সেটা এল কোথা থেকে ? কারুর তো গ্যাঁট কেটে এসেছে । তিনি কি এমনি এমনি দিয়েছেন ? খোলসা করুন । 

  

সাধু সাজুন কোন আপত্তি নেই ।  ঝেড়ে কেশে । বলুন বরাহনগরের দিলীপ, দমদমের খেটি’রা পাড়ায় পাড়ায় একদিনেতো গড়ে ওঠেনি, কি ভাবে তাদের এই বৈভব ? পানিহাটীর auto ড্রাইভাররা  কোন যুবরাজের তোলাবাজির   বিরুদ্ধে অমরাবতীর মাঠে জমায়েত করলেন ? কেন ? পাঁচ বছরে লাতাগুড়ীতে রিসোর্ট, পানিহাটীতে বিয়ে বাড়ি করেও থামছেন না কেন জনপ্রতিনিধি ? কেন হবেনা শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে  দলীয় তদন্ত কমিশন ? পারবেন বসাতে ? হিম্মত আছে ? 

কে এই শান্তনু সেন ?   


পেশায় ডাক্তার । তৃণমূলের কাউন্সিলর । ভাইপোর ছাতা নিয়ে ঘোরেন । কলকাতায় থাকলে ভাইপোর বাড়িতে ব্রেকফাস্ট সারেন । সেই সূত্রে তৃণমূলের তরফে Indian Medical Association এর সভাপতি । হাল আমলে রাজ্যসভার টিকিট এবং তৃণমূলের সাংসদ । তাঁর বিরুদ্ধে on camera  হাটে হাঁড়ি ভেঙেছেন উত্তর কলকাতার এক ব্যবসায়ী সুমন্ত্র চৌধুরী । বলেছেন - ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর থাকা কালীন ডঃ শান্তনু সেনকে দফায় দফায় ৪২ লক্ষ্ টাকা  দিয়েছেন তিনি । ডঃ শান্তনু সেনের রেট ছিল কাঠায় ২ লাখ । দরজায় ছিটকিনি তুলে মোবাইল  টেবিলে রাখিয়ে নিতেন নাকি টাকা । আবার নিজের মোবাইলে হিসেব রাখতেন পাওনাগণ্ডার ।    



বলুন সব ভুল । বলুন । একটা রাজ্যের সবাইকে বোকা বানান আবার । কেউ আর আপনাকে বা আপনার কথাকে seriously নেয়না । মদনও । পেটে পড়েনি । তাও যে ভাষায় সেদিন facebook live করলেন মদন !! অন্য সময় হলে get out বলতেন । এখন সে শক্তিটাও হারিয়েছেন । মদনের কিলও হজম করছেন । হাত ধরতে চাইছেন বাম কংগ্রেসের । রাজনৈতিক ভাবে হরির নাম করার সময় এসেছে বুঝেছেন । আই বি report বলছে – এভাবে চললে ২০২১ এ half centuryও হবেনা তৃণমূলের ।      

এখন বার বার মনে হয় আন্দোলনের সিঁড়ি বেয়ে আপানার উত্তরণ । তিন দশক ধরে দেখেছি আমরা । আর আজ নিজের পাপের বোঝা বয়ে পাতাল প্রবেশ করছেন আপনি । ক্রমশ । ক্রমশ । তলিয়ে যাচ্ছেন গভীর থেকে গভীর সমুদ্রে । আপনার কাজের একজন hardest critic হয়েও বলছি ভাল লাগছে না দেখতে এ দৃশ্য । বিশ্বাস করুন । যত ভুলই করে থাকুন, যত মিথ্যেই বলে থাকুন একটা glorious end দেখতে চাই আমরা । ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরানোর আগে একজন sportsmanএর মত আপনি নিজেই বলুন না – ‘আল বিদা’ । মান মর্যাদা যা খুইয়েছেন কিছুটা তো পুনরুদ্ধার হবে । ৭৫ শতাংশ না হোক । অন্তত কিছুটা ।   

আত্মমর্যাদা রক্ষার এই শেষ সুযোগ । শেষ ওভারে মারুন না একটা over boundary !   
আপনাকে মনে রাখবে বাঙালি । শতবর্ষ পরেও ।  

আপনার  মতামত  জানান কমেন্ট  বক্সে।..সাবস্ক্রাইব করুন www.ThinkAmit.blogspot.com 


Post a Comment

1 Comments

  1. Thank you so much for for sharing the writing of sanmoy mukhopadhyay... It is very true.

    ReplyDelete