সাম্প্রতিক দাবদাহ ও APB আনন্দের গাত্রদাহ



Education Minister of West Bengal Sri. Partha Chattopadhyay announcing the extension of summer vacation in schools due to recent heat wave conditions in the sate


সাম্প্রতিক দাবদাহ ও APB আনন্দের গাত্রদাহ 


সাম্প্রতিক প্রবল গরমে স্কুলের ছাত্রদের ছুটি ঘোষনা করেন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, নিঃসন্দেহে এটি ছিল একটি মানবিক প্রয়াস, অতীতে এই উদাহরন অনেক আছে আমাদের রাজ্যে ও ভিন রাজ্যে, তবে এবারে যেটা নজর কাড়লো সেটা হলো - এগিয়ে থাকার  অতিসক্রিয়তা, অনেক সময় সেটা সাঁতার না জানা মানুষটির জলে পরে গিয়ে হাত পা ছোড়ার মতোই সক্রিয় ও অসহায় মনে হয়েছে। হ্যা আমি আমাদের " এগিয়ে রাখার " ঠেকা নেওয়া চ্যানেল এবিপি আনন্দের কথাই বলছি। 

এই প্রেক্ষিতে আজ একটি লেখা সোশাল মিডিয়া তে পড়ে সেটা আপনাদের সাথে শেয়ার না করাটা অন্যায় হবে, মনে করে লেখকের নাম না জেনেই হুবহুব তুলে ধরলাম।  যিনি লিখেছেন তিনি যদি আমার ব্লগে কমেন্টে তার নাম উল্লেখ করেন চির কৃতজ্ঞ থাকবো। 


মাননীয় ABP গ্রুপের কর্ণধারদের দের উদ্দেশ্যে দুচার কথা বলবার প্রয়োজন অনুভব করে এই পোষ্ট করছি। হয়তো এতো সময় দেওয়ার দরকার ছিল না, উপেক্ষা করলেই হোতো, কিন্তু স্কুলে স্কুলে গিয়ে টিচার এলো কি না, এই খোঁজ নেওয়াকে খবর সংগ্রহ নয়, কেমন পিছনে লাগার চেষ্টা বলেই মনে হচ্ছে।
খবর তো অনেক রকম হয়, কই সবসময় তৎপরতা তো চোখে পড়েনা। এতো দিন নিয়োগ বন্ধ, শিক্ষিতরা বেকার থেকে হাহাকার পর্যায়ে পৌঁছে গেলো। আপনারা চুপ।
পঞ্চায়েত ভোট গেলো। কী পরিস্থিতিতে ভোট করতে হয়েছে সে খবর কারোর অজানা নয়। মিডিয়া প্রকাশ করেনি সেই প্রাণান্তকর অভিজ্ঞতা। রাজকুমার বাবু মারা গেলেন ভোট করতে গিয়ে। ময়না তদন্তের আগেই ঘোষণা হয়ে গেলো আত্মহত্যা। এরপর কি আর নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব? সরব হয়েছি আমরা, মিডিয়া কিন্তু প্রানপনে মুখ ঢেকেছিলো সেদিন। ধিক্কার এই নীরবতাকে।
ভাগাড় নিয়ে এতো কাণ্ড। লিখলেন বটে। কিন্তু ঠিক কোন রেস্তোরাঁয় সেই মাংস যেতো তার নাম দিলেন না। বাইপাসের ধারের, হাওড়ার নামি রেস্তোরাঁ এইসব বলে পাশ কাটালেন। এই বুঝি আপনাদের দায়বদ্ধতা। কি জানি সেটিং টা ঠিক কোন পর্যায়ে ছিল।
শিক্ষকেরা এসেছে কি না খোঁজ নিচ্ছেন। কিন্তু দিনের পর দিন চিট ফান্ডের বিজ্ঞাপনের সময় খোঁজ নিতে মনে ছিলোনা এরা কারা? এদের আয়ের উৎস কী? আসলে নামের সঙ্গে বাজার জুড়ে আছে তো, তাই বাজারে বিক্রি হওয়াটাই আসল উদ্দেশ্য। তবে জেনে রাখুন ওই সর্বহারা মানুষগুলির হাহাকারের দায় কিন্তু এড়ানো যাবেনা।
মাঝে মাঝেই দেখি ছবি দেন এই নেতার সঙ্গে ওই অপরাধী। লাল গোল করে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করেন তাদের। আচ্ছা সেই হেলিকপ্টার চড়ার দিন গুলি মনে আছে? মনে আছে সঙ্গে কারা থাকতেন? আজ তারা ব্যাংক জালিয়াতি, চিট ফান্ডের কেসের আসামী। চিরাগ নিভেছে তাদের। তাদের পাশে বসা ছবিগুলো তো তুলে ধরতে পারেন।
সেই G.D. Birla স্কুলের ঘটনা নিয়ে কতো খবর করলেন, কতো ঘণ্টা খানেক শব্দ দূষণ হোল। তারপর? দোষ প্রমান হোল কী? ছাপার দায় নেই। কাদা ছেটানো হোল, শিক্ষকরা কতোটা ভয়ংকর বোঝানো গেলো। এই তো চাই।
কোন এক চামচে সাংবাদিক লন্ডনে গিয়ে চামচে চুরি করলেন। খবরটা প্রকাশিত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, কিন্তু আপনারা এক কলমও লেখেননি। আসলে নৈতিকতার কাণ্ডারিদের আসল রূপটা প্রকাশ পেয়ে যেতো যে। প্রকাশ এর কথায় মনে পড়লো, আপনাদের প্রকাশ সিনহা, খবর সংগ্রহের জন্য হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ার ভিডিও দেখেছি আমরা। নৈতিকতা আহা! ভাগাড়ের শকুনকেও হার মানায়।
খবরের মাঝে সদর্প ঘোষণা, "এগিয়ে থাকে, এগিয়ে রাখে।" আর তার পড়েই বিজ্ঞাপন," দাঁড়াবে দাঁড়াবে, জাপানী তেল আছে না।" শিশু মনের বিকাশ নিয়ে কতো বক্তৃতাইতো মারেন, মনোবিদ বসান চ্যানেলে, জিজ্ঞাসা করবেন তো রকেটের খাট ভাঙা, জাপানী তেলের অনন্য অনুভব কতোটা প্রভাবিত করে শিশুমনকে।
কাগজের প্রথম পাতায় ছেপে দেন ঝুলন্ত দেহের ছবি। শিউরে উঠি আমরা, লুকিয়ে ফেলি কাগজ। ফেলতে হয়, নয়তো পিছিয়ে পরতে হয়।
আপনাদের কাগজে দেখলাম(১৯/৬) দ্বিতীয়বার গরমের ছুটি দেওয়া হোল। গরমের ছুটি মানে তো পুরো ছুটি, টিচারদের আসতে হয় নাকি? নোটিশে পেলাম ক্লাস সাসপেন্ড, টিচারদের আসতে হবে। তাহলে ওই ভ্রান্ত সংবাদ পেশ করলেন কেন?আসলে শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা থেকে একের পর এক নোটিশ বেরনো পুরো বিষয়টাই ছিল বিভ্রান্তিকর। আগে প্রশ্নকরুন তা নিয়ে।মাননীয় মন্ত্রী মশাইএর ঘোষণাকে কিসের জোরে পাল্টায় শিক্ষাদপ্তর। এইরকম হলে আমরা শুধু নই, শিক্ষার্থীরাও তো ভরসা করতে পারবেনা মন্ত্রী মশাইয়ের কথায়। আর বিভ্রান্তির জেরে নাকাল হবে শিক্ষককুল। সেই সুযোগে আপনারা ছুটবেন ছিদ্রান্বেষণে।
ছুটুন, ক্ষতি নেই। আমরা তো আর আপনাদের আটকাতে উন্নয়নের রূপ নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে পারবোনা। ক্যামেরা ভেঙে শিক্ষা দিতেও পারবোনা। আমরা মাননীয় শিক্ষক। হাজার বঞ্চনা অপমান মেনে নিতেই শিখেছি তাই। তবে আমরাও পারি। পারি বয়কট করতে। পেপার চ্যানেল শুধু নয়, ওখানে যারা বিজ্ঞাপন দেবে তাদের পণ্যও বয়কট করবো প্রয়োজনে। হয়তো ৩৩কোটি নই। কিন্তু আমাদের সংখ্যাটা খুব ক্ষীণও নয়। তাই সাধু সাবধান।

Post a Comment

0 Comments