কেন কোনো নায়িকা ও নায়কদের ভোট দেওয়া উচিত নয় | Why You Should Not Vote Celebrities to Power

#NoVoteForFilmStars


কেন কোনো নায়িকা ও নায়কদের ভোট দেওয়া উচিত নয় ! উঠে এলো শৌর্য ব্যানার্জীর লেখায় :


ধরা যাক, প্রেসিডেন্সি কলেজে ফিজিক্সের শিক্ষক নেওয়া হবে। যদি ইন্দ্রাণী হালদার বা সোহমকে নেওয়া হয়, কেমন হবে?‌ ওঁরা বলতেই পারেন, ছাত্রদের জন্য কাজ করতে চাই। তাই, প্রেসিডেন্সিতে অধ্যাপনা করতে চাই।

ধরা যাক, বাংলা রনজি দলে বা কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে একজন অলরাউন্ডার দরকার। কাকে নেওয়া যায়?‌ধরা যাক, কবি জয় গোস্বামী বা পরিচালক অরিন্দমশীলকে নেওয়া হল। কেমন হবে?‌ ওঁরা তো বলতেই পারেন,আমি বাংলাকে ভালবাসি। বাংলাকে জেতাতে চাই।

ধরা যাক, আপনার কোনও নিকট আত্মীয় বা বন্ধু গুরুতর অসুস্থ। কোনও নার্সিংহোমে ভর্তি করেছেন। সিরিয়াস একটা অপারেশন করতে হবে। অমনি আপনি দেখলেন, ডাক্তারের পোশাক পরে দেবশ্রী রায় বা তাপস পাল আসছেন। কেমন হবে?‌ ওঁরা তো বলতেই পারেন, মানুষের জন্য কাজ করতে চাই, তাই এই অপারেশন আমিই করব।

নিশ্চয় আপনি মনে মনে ভাবছেন, ফাজলামি হচ্ছে?‌ যাকে তাকে প্রেসিডেন্সিতে পাঠিয়ে দিলেই হল!? যাকে তাকে বাংলার হয়ে ইডেনে নামিয়ে দিলেই হল? যাকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে দিলেই হল!‌

কেন মশাই, অসুবিধা কী আছে?‌ দেবশ্রী রায় অপারেশন করতে পারবেন না?‌ জয় গোস্বামী ক্রিকেট খেলতে পারবেন না?‌ নাকি ইন্দ্রাণী হালার প্রেসিডেন্সিতে ফিজিক্সের ক্লাস নিতে পারবেন না?‌ নিশ্চয় পারবেন। যাঁর ‘‌অনুপ্রেরণা’‌য় এইরাজ্যে সবকিছু হয়, তিনি চাইলে নিশ্চয় পারবেন।

আর এঁরা যদি ফিজিক্স পড়াতে পারেন, অপারেশন করতে পারেন, ক্রিকেট খেলতে পারেন, তাহলে মিমি–‌নুসরতরাও পার্লামেন্টে যেতে পারবেন। আসলে, যে কোনও জায়গায় কাজ করতে গেলে, সেই কাজটা শিখে আসতে হয়। শুধু রাজনীতি করতে গেলে কিছু শেখার দরকার নেই, কিছু জানার দরকার নেই। যাঁকে খুশি নামিয়ে দিলেই হল। স্কুল–‌কলেজে নাকি যাকে–‌তাকে নেওয়া যায় না। কিন্তু পার্লামেন্টে যাকে খুশি পাঠানোই যায়। হ্যাঁ, পার্লামেন্টকে এতটাই সস্তা মনে করেন তৃণমূল নেত্রী।



মুনমুন সেন বা সন্ধ্যা রায় পাঁচ বছর সাংসদ ছিলেন। কী কাজ করেছেন, সেই প্রশ্ন না হয় নাই বা করলেন। কারণ, একজন এমপি–‌র কী কাজ, সেটা তাঁরা বুঝে উঠতেই পারলেন না। 

জিজ্ঞেস করুন তো, বাঁকুড়া বা মেদিনীপুর লোকসভার মধ্যে কোন কোন বিধানসভা পড়ে?‌ নিশ্চিতভাবেই হোঁচট খাবেন। একটা বিধানসভার কতটা আয়তন, সে সম্পর্কে এঁদের ন্যূনতম ধারনাটুকুও নেই। আগেও ছিল না। এম পি হওয়ার পরেও ন্যূনতম শিক্ষিত হওয়ার চেষ্টা করেননি। 

হ্যাঁ, যিনি নিজের সাতটা কেন্দ্রের নাম জানেন না, তাঁর ডিগ্রি যতই থাক, তাঁকে মূর্খ ছাড়া কী বলবেন?‌
সুতরাং, দোষটা মিমি বা নুসরতের নয়। লোকসভার গুরুত্ব যে কী, তাঁরা না জানতেই পারেন, কিন্তু যিনি তাঁদের লোকসভায় পাঠাতে চাইছেন, তিনি বোঝেন তো?‌ 

একটা গল্প আছে। একটি গ্রামে একটি অনুষ্ঠান। বাইরে থেকেকোনও এক শিল্পী এসে গেয়েই যাচ্ছেন, থামার কোনও লক্ষণ নেই। এদিকে দর্শকরা একে একে সবাই বাড়ি চলে যাচ্ছেন। গায়ক তবু গেয়েই চলেছেন। দেখা গেল, একজন লাঠি হাতে মঞ্চের সামনে এসে কাকে যেন খুঁজছেন। এবার গায়ক ভয় পেয়ে গেলেন। গান থামিয়ে দিলেন। তখন লাঠিহাতে সেই ভদ্রলোক তাঁকে আশ্বস্ত করে বললেন, ‘‌ আরে, আপনি থামলেন কেন?‌ আপনি গ্রামের অতিথি,  আমি আপনাকেকিছু করব না। আমি তাকে খুঁজছি যে আপনাকে নিয়ে এসেছেন।


একমত হলে শেয়ার করুন 


Post a Comment

0 Comments